০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবেক সাংসদ রণজিত কুমার রায়ের জব্দকৃত সম্পদ বিক্রি হচ্ছে

Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৫০:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৯ Time View

 যশোর ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় কতৃর্ক অবৈধভাবে উপার্জিত কোটি কোটি টাকার সম্পদ বর্তমান সরকার জব্দ করলেও তা গোপনে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি রণজিত রায়ের ছেলে রাজিব রায় তিনটি ট্রাক বিক্রি করেছেন। আহাদ পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিস ৫০লাখ টাকা মূল্যে এ তিনটি ট্রাক ক্রয় করেছে। আহাদ পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের সত্ত্বাধিকারী আহাদ আলী এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, যশোর ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়, তার স্ত্রী নিয়তি রানী রায়, ছেলে রাজীব কুমার রায় ও সজিব কুমার রায়ের নামে থাকা ৪টি ফ্লাট, ২টি বাড়ি, ৩টি ট্রাক, ৬০টি দোকানসহ ৭৯ দশমিক ৬২ বিঘা জমি ও ১৩৭টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ২ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ৬৬৭ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেন ঢাকার একটি আদালত। অথচ আদালতের এই রায় মানা হচ্ছে না। সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে যশোর উপশহরে ১৩৫৬ বর্গফুটের ২টি ফ্লাট ও যশোর শহরে ১২২৪ বর্গফুটের আরও ২টি ফ্লাট, চার ও তিন তলার ২টি বাড়ি, ৩টি ট্রাক, অভয়নগর উপজেলায় ৬ হাজার ৬ বর্গফুটের নির্মাণাধীন ৬০টি দোকান ও ৭৯ দশমিক ৬২ বিঘা জমি অর্জনের অভিযোগ ওঠে। এসব জমির মধ্যে রনজিত কুমার রায়ের নামে রয়েছে ৩১ দশমিক ৪৮ বিঘা, তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ দশমিক ৭৫ বিঘা ও তাদের সন্তানদের নামে রয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৯ বিঘা জমি। এসব জমির মোট দলিল মূল্য ১৭ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৫০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রণজিত কুমার রায়ের ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ৭১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৮ টাকা, তার স্ত্রীর ২১টি ব্যাংক হিসাবে ৬৫ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬ টাকা, তাদের সন্তান রাজীব কুমারের ৪৪টি ব্যাংক হিসাবে ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৬০২ টাকা, তার নিয়তি ট্রেডে আছে ১৪ হাজার ৩০১ টাকা, রাজীবের স্ত্রী রিশিতা সাহার ২০টি ব্যাংক হিসাবে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৯৮৪ টাকা, রণজিতের ছেলে সজীব কুমারের ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৫ লাখ ৬০ হাজার ৬৪ টাকা ও সজীবের স্ত্রী অনিন্দিতা মালাকার পিউর ব্যাংক হিসাবে ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৫২ টাকা রয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকার একটি আদালত এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এবং বিভিন্ন ব্যাংকে জমাকৃত টাকা জব্দ করলেও তা আর সরকারের আয়ত্ত্বে থাকছে না। আদালত কতৃর্ক জব্দকৃত এসব সম্পত্তির মধ্যে সম্প্রতি রণজিত কুমার রায়ের ছেলে রাজিব রায় আহাদ পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের কাছে ৫০ লাখ টাকা মূল্যে তিনটি ট্রাক বিক্রি করে দিয়েছেন। ট্রাক ৩টির নম্বর হলো যশোর—ট —১১—৬০৮২, যশোর—ট—১১—৩৮৫৪ ও ঢাকা মেট্রো—ড—২০—৩৩৯৯ । ট্রাক ৩টি বিক্রির ক্ষেত্রে রণজিত কুমার রায়ের পালিত ছেলে দুর্গা নাথ রাজিব রায়কে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, পালিত ছেলে দুর্গা নাথ প্রতি মাসে জব্দকৃত বাড়ি, ফ্লাট ও দোকান থেকে ভাড়া আদায় করছেন। তাছাড়া তিনি রণজিত কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যদের পালিয়ে যেতেও সহযোগিতা করেছেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এদিকে সরকারি জব্দকৃত সম্পত্তি বিক্রয়ে কোনো বাঁধা নিষেধ মানা হচ্ছে না ও যথেচ্ছা ভাড়া দিয়ে আদায় করা হচ্ছে অর্থ। এ ব্যাপারে রণজিত কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে পালিত ছেলে দুর্গা নাথের বক্তব্য নেয়ার জন্য শহরের বারান্দি নাথ পাড়ায় যেয়ে ব্যাপক খোঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সাবেক সাংসদ রণজিত কুমার রায়ের জব্দকৃত সম্পদ বিক্রি হচ্ছে

Update Time : ০৭:৫০:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 যশোর ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় কতৃর্ক অবৈধভাবে উপার্জিত কোটি কোটি টাকার সম্পদ বর্তমান সরকার জব্দ করলেও তা গোপনে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি রণজিত রায়ের ছেলে রাজিব রায় তিনটি ট্রাক বিক্রি করেছেন। আহাদ পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিস ৫০লাখ টাকা মূল্যে এ তিনটি ট্রাক ক্রয় করেছে। আহাদ পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের সত্ত্বাধিকারী আহাদ আলী এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, যশোর ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়, তার স্ত্রী নিয়তি রানী রায়, ছেলে রাজীব কুমার রায় ও সজিব কুমার রায়ের নামে থাকা ৪টি ফ্লাট, ২টি বাড়ি, ৩টি ট্রাক, ৬০টি দোকানসহ ৭৯ দশমিক ৬২ বিঘা জমি ও ১৩৭টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ২ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ৬৬৭ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেন ঢাকার একটি আদালত। অথচ আদালতের এই রায় মানা হচ্ছে না। সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে যশোর উপশহরে ১৩৫৬ বর্গফুটের ২টি ফ্লাট ও যশোর শহরে ১২২৪ বর্গফুটের আরও ২টি ফ্লাট, চার ও তিন তলার ২টি বাড়ি, ৩টি ট্রাক, অভয়নগর উপজেলায় ৬ হাজার ৬ বর্গফুটের নির্মাণাধীন ৬০টি দোকান ও ৭৯ দশমিক ৬২ বিঘা জমি অর্জনের অভিযোগ ওঠে। এসব জমির মধ্যে রনজিত কুমার রায়ের নামে রয়েছে ৩১ দশমিক ৪৮ বিঘা, তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ দশমিক ৭৫ বিঘা ও তাদের সন্তানদের নামে রয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৯ বিঘা জমি। এসব জমির মোট দলিল মূল্য ১৭ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৫০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রণজিত কুমার রায়ের ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ৭১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৮ টাকা, তার স্ত্রীর ২১টি ব্যাংক হিসাবে ৬৫ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬ টাকা, তাদের সন্তান রাজীব কুমারের ৪৪টি ব্যাংক হিসাবে ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৬০২ টাকা, তার নিয়তি ট্রেডে আছে ১৪ হাজার ৩০১ টাকা, রাজীবের স্ত্রী রিশিতা সাহার ২০টি ব্যাংক হিসাবে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৯৮৪ টাকা, রণজিতের ছেলে সজীব কুমারের ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৫ লাখ ৬০ হাজার ৬৪ টাকা ও সজীবের স্ত্রী অনিন্দিতা মালাকার পিউর ব্যাংক হিসাবে ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৫২ টাকা রয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকার একটি আদালত এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এবং বিভিন্ন ব্যাংকে জমাকৃত টাকা জব্দ করলেও তা আর সরকারের আয়ত্ত্বে থাকছে না। আদালত কতৃর্ক জব্দকৃত এসব সম্পত্তির মধ্যে সম্প্রতি রণজিত কুমার রায়ের ছেলে রাজিব রায় আহাদ পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের কাছে ৫০ লাখ টাকা মূল্যে তিনটি ট্রাক বিক্রি করে দিয়েছেন। ট্রাক ৩টির নম্বর হলো যশোর—ট —১১—৬০৮২, যশোর—ট—১১—৩৮৫৪ ও ঢাকা মেট্রো—ড—২০—৩৩৯৯ । ট্রাক ৩টি বিক্রির ক্ষেত্রে রণজিত কুমার রায়ের পালিত ছেলে দুর্গা নাথ রাজিব রায়কে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, পালিত ছেলে দুর্গা নাথ প্রতি মাসে জব্দকৃত বাড়ি, ফ্লাট ও দোকান থেকে ভাড়া আদায় করছেন। তাছাড়া তিনি রণজিত কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যদের পালিয়ে যেতেও সহযোগিতা করেছেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এদিকে সরকারি জব্দকৃত সম্পত্তি বিক্রয়ে কোনো বাঁধা নিষেধ মানা হচ্ছে না ও যথেচ্ছা ভাড়া দিয়ে আদায় করা হচ্ছে অর্থ। এ ব্যাপারে রণজিত কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে পালিত ছেলে দুর্গা নাথের বক্তব্য নেয়ার জন্য শহরের বারান্দি নাথ পাড়ায় যেয়ে ব্যাপক খোঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।