০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আয়নাঘরে নিজের সেল দেখিয়ে দুঃসহ বর্ণনা দিলেন ব্যারিস্টার আরমান

Reporter Name
  • Update Time : ০১:৩৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৭৯ Time View

লিখনী ডেক্স:অনেক সময় ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে বসিয়ে রাখত। উঠতে দিত না, দাঁড়াতে দিত না। কেন, প্রশ্ন করলে বলত, স্যার আসবেন। চোখ বাঁধা অবস্থায় দেয়ালের দিকে ফিরে বসে থাকতাম।’

এভাবেই আয়নাঘরে কাটানো দুঃসহ স্মৃতির বর্ণনা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাসেম আরমান।বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তিনটি এলাকায় র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় উপদেষ্টা।

রাজধানীর উত্তরায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ১-এর আয়নাঘর পরিদর্শনের সময় আহমাদ বিন কাসেম উপস্থিত ছিলেন।হাতের ইশারায় একটি ঘর দেখিয়ে ব্যারিস্টার আরমান বলেন, ‘এখানে আমাকে আট বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল। দিনের বেলায় চোখ বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে রাখত। রাতের বেলায় পিছমোড়া করে বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে রাখত। কেন, জানতে চাইলে তারা কিছু বলত না। নামাজের সময় পর্যন্ত দিত না। আট বছর ধরে তারা আমাকে নারকীয় অভিজ্ঞতা দিয়েছে।’

পরিদর্শনে থাকা প্রধান উপদেষ্টাকে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘আমি রোগা ছিলাম। মাঝেমধ্যে টাফ হয়ে যেত। এ রকম হতো যে ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে বসিয়ে রাখত। উঠতে দিত না, দাঁড়াতে দিত না। কেন, প্রশ্ন করলে বলত, স্যার আসবেন।’

চোখ বাঁধা অবস্থায় দেয়ালের দিকে ফিরে বসে থাকতাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বুঝতে পারতাম পেছন থেকে কেউ আসছে, মোবাইলের রিংটোনের আওয়াজ হচ্ছে। দামি পারফিউমের ঘ্রাণ পেতাম…এখানে তো প্রস্রাব-পায়খানার গন্ধ নাকে আসত। বুঝতাম সিনিয়র কেউ পেছন থেকে দেখছে।’

এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানতে চান, ‘ছাড়ল কখন?’

আরমান বলেন, ‘আমি পরে যেটা বুঝতে পারলাম ৬ তারিখ (আগস্ট) ভোরে। ৫ তারিখ পালাল, ৬ তারিখ ভোরে আমাদের ছেড়ে দিল। যখন আমাকে বের করে, আমি মনে করেছিলাম আমাকে মেরে ফেলবে।

আরমানের পরিবারের অভিযোগ, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট শেখ হাসিনার নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী তাকে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং আট বছর গোপন কারাগারে আটকে রাখে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

আয়নাঘরে নিজের সেল দেখিয়ে দুঃসহ বর্ণনা দিলেন ব্যারিস্টার আরমান

Update Time : ০১:৩৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

লিখনী ডেক্স:অনেক সময় ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে বসিয়ে রাখত। উঠতে দিত না, দাঁড়াতে দিত না। কেন, প্রশ্ন করলে বলত, স্যার আসবেন। চোখ বাঁধা অবস্থায় দেয়ালের দিকে ফিরে বসে থাকতাম।’

এভাবেই আয়নাঘরে কাটানো দুঃসহ স্মৃতির বর্ণনা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাসেম আরমান।বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তিনটি এলাকায় র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় উপদেষ্টা।

রাজধানীর উত্তরায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ১-এর আয়নাঘর পরিদর্শনের সময় আহমাদ বিন কাসেম উপস্থিত ছিলেন।হাতের ইশারায় একটি ঘর দেখিয়ে ব্যারিস্টার আরমান বলেন, ‘এখানে আমাকে আট বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল। দিনের বেলায় চোখ বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে রাখত। রাতের বেলায় পিছমোড়া করে বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে রাখত। কেন, জানতে চাইলে তারা কিছু বলত না। নামাজের সময় পর্যন্ত দিত না। আট বছর ধরে তারা আমাকে নারকীয় অভিজ্ঞতা দিয়েছে।’

পরিদর্শনে থাকা প্রধান উপদেষ্টাকে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘আমি রোগা ছিলাম। মাঝেমধ্যে টাফ হয়ে যেত। এ রকম হতো যে ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে বসিয়ে রাখত। উঠতে দিত না, দাঁড়াতে দিত না। কেন, প্রশ্ন করলে বলত, স্যার আসবেন।’

চোখ বাঁধা অবস্থায় দেয়ালের দিকে ফিরে বসে থাকতাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বুঝতে পারতাম পেছন থেকে কেউ আসছে, মোবাইলের রিংটোনের আওয়াজ হচ্ছে। দামি পারফিউমের ঘ্রাণ পেতাম…এখানে তো প্রস্রাব-পায়খানার গন্ধ নাকে আসত। বুঝতাম সিনিয়র কেউ পেছন থেকে দেখছে।’

এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানতে চান, ‘ছাড়ল কখন?’

আরমান বলেন, ‘আমি পরে যেটা বুঝতে পারলাম ৬ তারিখ (আগস্ট) ভোরে। ৫ তারিখ পালাল, ৬ তারিখ ভোরে আমাদের ছেড়ে দিল। যখন আমাকে বের করে, আমি মনে করেছিলাম আমাকে মেরে ফেলবে।

আরমানের পরিবারের অভিযোগ, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট শেখ হাসিনার নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী তাকে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং আট বছর গোপন কারাগারে আটকে রাখে।