০৪:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই শিশু হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনের যাবজ্জীবন

Reporter Name
  • Update Time : ১০:২১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৫ Time View

২১ অক্টোবর মোবারক হোসাইন, কক্সবাজার কক্সবাজারের রামুতে অপহরণের পর দুই শিশু হত্যা মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় তিন নারীসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ওসমান গণি এ রায় দেন। আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মীর মোশারফ হোসেন টিটু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এসময় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত মোকারমা সুলতানা পুতু নামের তরুণীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, গর্জনিয়া বড়বিল এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, আবদু শুক্কুর, আলমগীর হোসেন বুলু, মিজানুর রহমান ও মো. শহীদুল্লাহ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, একই এলাকার আবদুল মজিদ বদাইয়া, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা খাতুন ও লায়লা বেগম। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকেলে উপজেলা গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকার দোকান কর্মচারী মো. ফোরকানের দুই ছেলে হাসান শাকিল (৯) ও হোসেন কাজল (৮) বাড়ি থেকে একটু দূরে খেলছিল। এসময় পাখির ছানা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় আবদু শুক্কুরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমসহ একটি চক্র তাদের অপহরণ করে। পরে ওই রাতে পরিবারের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।এরপর পুলিশ ও স্থানীয়রা মিলে স্থানীয় পাহাড়ি এলাকাসহ অপহরণকারীদের আস্তানায় তল্লাশি চালায়। অপহরণের দুই দিন পর ১৯ জানুয়ারি রাত ১ টার দিকে স্থানীয় জালাল আহমেদের ফলের বাগান সংলগ্ন একটি খালের পাড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় দুই শিশুর মরদেহ পাওয়ায় যায়। পরদিন শিশুদের বাবা ফোরকান রামু থানায় আটজনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই ৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন, মুক্তিপণ না দিয়ে পুলিশকে জানানোয় ক্ষুব্ধ হয়ে দুই শিশুকে হত্যা করা হয়। একটি বাড়িতে হত্যা করে মরদেহ প্রথমে ড্রামে ভরে রাখা হয়। পরে সুযোগ বুঝে স্থানীয় খালের পাড়ে ফেলে দেওয়া হয়। আদালতের স্পেশাল পিপি মীর মোশারফ হোসেন টিটু বলেন, নয় বছর ধরে মামলার বিচারিক কার্যকম চলে। এই সময় সাক্ষী-প্রমাণসহ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। তাই আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণাকালে প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত থাকলেও অন্যরা সবাই পলাতক রয়েছেন। এ সময় স্থানীয়রা দাবী জানান, যথা সময় তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক। এই ধরনের নেক্কারজনক ঘটনা যেন আর না হয় পুরো বাংলাদেশ দেশে। সন্তানদের পিতা- মাতা বলেন, আমরা দুইজনই এই রায়ে সন্তুষ্ট আমাদের কোন দুঃখ নেই।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

দুই শিশু হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনের যাবজ্জীবন

Update Time : ১০:২১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

২১ অক্টোবর মোবারক হোসাইন, কক্সবাজার কক্সবাজারের রামুতে অপহরণের পর দুই শিশু হত্যা মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় তিন নারীসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ওসমান গণি এ রায় দেন। আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মীর মোশারফ হোসেন টিটু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এসময় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত মোকারমা সুলতানা পুতু নামের তরুণীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, গর্জনিয়া বড়বিল এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, আবদু শুক্কুর, আলমগীর হোসেন বুলু, মিজানুর রহমান ও মো. শহীদুল্লাহ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, একই এলাকার আবদুল মজিদ বদাইয়া, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা খাতুন ও লায়লা বেগম। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকেলে উপজেলা গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকার দোকান কর্মচারী মো. ফোরকানের দুই ছেলে হাসান শাকিল (৯) ও হোসেন কাজল (৮) বাড়ি থেকে একটু দূরে খেলছিল। এসময় পাখির ছানা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় আবদু শুক্কুরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমসহ একটি চক্র তাদের অপহরণ করে। পরে ওই রাতে পরিবারের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।এরপর পুলিশ ও স্থানীয়রা মিলে স্থানীয় পাহাড়ি এলাকাসহ অপহরণকারীদের আস্তানায় তল্লাশি চালায়। অপহরণের দুই দিন পর ১৯ জানুয়ারি রাত ১ টার দিকে স্থানীয় জালাল আহমেদের ফলের বাগান সংলগ্ন একটি খালের পাড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় দুই শিশুর মরদেহ পাওয়ায় যায়। পরদিন শিশুদের বাবা ফোরকান রামু থানায় আটজনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই ৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন, মুক্তিপণ না দিয়ে পুলিশকে জানানোয় ক্ষুব্ধ হয়ে দুই শিশুকে হত্যা করা হয়। একটি বাড়িতে হত্যা করে মরদেহ প্রথমে ড্রামে ভরে রাখা হয়। পরে সুযোগ বুঝে স্থানীয় খালের পাড়ে ফেলে দেওয়া হয়। আদালতের স্পেশাল পিপি মীর মোশারফ হোসেন টিটু বলেন, নয় বছর ধরে মামলার বিচারিক কার্যকম চলে। এই সময় সাক্ষী-প্রমাণসহ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। তাই আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণাকালে প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত থাকলেও অন্যরা সবাই পলাতক রয়েছেন। এ সময় স্থানীয়রা দাবী জানান, যথা সময় তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক। এই ধরনের নেক্কারজনক ঘটনা যেন আর না হয় পুরো বাংলাদেশ দেশে। সন্তানদের পিতা- মাতা বলেন, আমরা দুইজনই এই রায়ে সন্তুষ্ট আমাদের কোন দুঃখ নেই।