০৩:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে নারী নির্যাতন ও হত্যার হুমকি – ডাউকি গ্রামে আতঙ্ক,থানায় অভিযোগ দায়ের

Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৫ Time View

আলমডাঙ্গা অফিসঃ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি প্রাইমারী স্কুলপাড়া গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে এক নারীর ওপর নির্মম হামলা ও হত্যার হুমকির ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী নারী আবেদা খাতুন (৫৫) অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে তার প্রতিবেশী কুদ্দুস আলী (৪৮), ছেলে মিলন আলী (২৮) এবং তার দুই মেয়ে ফেরদৌসি খাতুন (২২) ও রেবেকা খাতুন (১৮) পরিকল্পিতভাবে তার জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

আবেদা খাতুন জানান, এ বিষয়ে একাধিক মামলা দায়ের হলেও প্রতিবার আদালতের রায় তার পক্ষে এসেছে। তবুও বিবাদীরা দখলচেষ্টা থামায়নি। বরং তারা বারবার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করে আসছে।

গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে জমি দখলের চেষ্টা করতে আসলে আবেদা খাতুন বাঁধা দেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তখন কুদ্দুস আলী তাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়, অন্যরা কিল-ঘুষি ও মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। মিলন আলী রামদা গলায় ধরে হত্যার হুমকি দেয়। একইসঙ্গে তাদের জমিতে থাকা ফলজ ও বনজ গাছপালা কেটে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী ইসরাফ আলী, ছমির ও জমিরসহ একাধিক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, তারা ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছেন এবং নির্যাতনের দৃশ্য তাদের চোখের সামনে ঘটেছে।

ভুক্তভোগী আবেদা খাতুন আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ জানান—“অভিযোগ হাতে পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ডাউকি গ্রামে এ ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চলা এ বিরোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিবাদীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। গ্রামের প্রবীণরা জানিয়েছেন, জমি নিয়ে বিরোধ থাকলেও একের পর এক হামলা এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা অশান্তি ও আইনের শাসনের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি করছে।

এই ঘটনা শুধু একটি জমি দখলচেষ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং গ্রামীণ এলাকায় ভূমি-বিরোধ কীভাবে পারিবারিক সহিংসতা, নারী নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকিতে রূপ নিচ্ছে তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও বারবার এমন দখলচেষ্টা গ্রামীণ বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা ও আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতার দিকটিও স্পষ্ট করছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

১০

আলমডাঙ্গায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে নারী নির্যাতন ও হত্যার হুমকি – ডাউকি গ্রামে আতঙ্ক,থানায় অভিযোগ দায়ের

Update Time : ০৬:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আলমডাঙ্গা অফিসঃ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি প্রাইমারী স্কুলপাড়া গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে এক নারীর ওপর নির্মম হামলা ও হত্যার হুমকির ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী নারী আবেদা খাতুন (৫৫) অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে তার প্রতিবেশী কুদ্দুস আলী (৪৮), ছেলে মিলন আলী (২৮) এবং তার দুই মেয়ে ফেরদৌসি খাতুন (২২) ও রেবেকা খাতুন (১৮) পরিকল্পিতভাবে তার জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

আবেদা খাতুন জানান, এ বিষয়ে একাধিক মামলা দায়ের হলেও প্রতিবার আদালতের রায় তার পক্ষে এসেছে। তবুও বিবাদীরা দখলচেষ্টা থামায়নি। বরং তারা বারবার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করে আসছে।

গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে জমি দখলের চেষ্টা করতে আসলে আবেদা খাতুন বাঁধা দেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তখন কুদ্দুস আলী তাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়, অন্যরা কিল-ঘুষি ও মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। মিলন আলী রামদা গলায় ধরে হত্যার হুমকি দেয়। একইসঙ্গে তাদের জমিতে থাকা ফলজ ও বনজ গাছপালা কেটে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী ইসরাফ আলী, ছমির ও জমিরসহ একাধিক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, তারা ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছেন এবং নির্যাতনের দৃশ্য তাদের চোখের সামনে ঘটেছে।

ভুক্তভোগী আবেদা খাতুন আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ জানান—“অভিযোগ হাতে পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ডাউকি গ্রামে এ ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চলা এ বিরোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিবাদীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। গ্রামের প্রবীণরা জানিয়েছেন, জমি নিয়ে বিরোধ থাকলেও একের পর এক হামলা এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা অশান্তি ও আইনের শাসনের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি করছে।

এই ঘটনা শুধু একটি জমি দখলচেষ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং গ্রামীণ এলাকায় ভূমি-বিরোধ কীভাবে পারিবারিক সহিংসতা, নারী নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকিতে রূপ নিচ্ছে তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও বারবার এমন দখলচেষ্টা গ্রামীণ বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা ও আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতার দিকটিও স্পষ্ট করছে।