কুষ্টিয়ায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণ-ডাকাতি, গ্রেপ্তার

- Update Time : ০৬:৩৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২১ Time View

কুষ্টিয়ায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণ-ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৩ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের সদস্যদের হাত-মুখ বেঁধে ডাকাত দলের সদস্যরা ঘরে থাকা স্বর্ণালংকারসহ প্রায় এক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় ধর্ষণ ও দস্যুতার মামলা হয়েছে। মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরদিয়াড় গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে তারিক রহমান, কায়ামারি এলাকার রসুল মহলদারের ছেলে মেহেদী হাসান লাভলু ও একই এলাকার রশিদের ছেলে সুবেল। মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী নারী উল্লেখ করেছেন যে, গত সোমবার রাত ১১টার দিকে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমিসহ আমার স্বামী এবং আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ও আমার দেবর নিজ নিজ শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ি। এরপর রাত ২টার দিকে আসামিরা দেশীয় তৈরি ধারালো হাঁসুয়া ও রামদা দিয়ে আমার শ্বশুরবাড়ির টিনের গেট খুলে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে। ওই সময় আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি টের পেয়ে ঘর থেকে বাহির হলে আসামিরা আমার শ্বশুরকে বলে যে, ‘পানি খাবো জগ দে’। আমার শ্বশুর আমার স্বামীকে ডাকাডাকি করলে আমার স্বামীসহ আমি, আমার মেজো দেবর ও ছোট দেবর নিজ নিজ ঘর থেকে বের হলে আসামিরা আমাদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হত্যার হুমকি দিয়ে আমার শ্বশুর ও মেজো দেবরকে ওড়না দিয়ে হাত মুখ বাঁধে। পরে আসামিরা সবাইকে শ্বশুরের বসতঘরের শয়নকক্ষে আটক রাখে। আমার স্বামীকে আমাদের শয়ন কক্ষে ওড়না দিয়ে হাত ও মুখ বেঁধে আটকে রাখে। এরপর আমার মেজো দেবরের শয়নকক্ষে আমাকে জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় আসামির মুখের গামচা খুলে গেলে আমি চিনতে পারি। পরবর্তীতে আসামিরা আমাদের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও রুপার অলংকারসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। লুণ্ঠিত মালামালের বিষয়ে আমার শ্বশুর বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। আমি আমার ধর্ষণের ঘটনার বিষয়টি ওই দিন লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে বলিনি। গত ২১ সেপ্টেম্বর আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ধর্ষণের বিষয়ে আমার স্বামী ও শাশুড়িকে জানাই। পরে সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে মামলা দায়ের করেছি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মামলা করতে ভুক্তভোগী পরিবারকে নিরুৎসাহিত করা হয়। পরে গৃহবধূ ও তার শ্বশুর দৌলতপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেন, লাভলু, সুবেল ও তারিখের নেতৃত্বে সাত থেকে আটজনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল প্রথমে কলেজপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। ফেরার পথে তারা ভুক্তভোগীর বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হাত মুখ বেধে হত্যার হুমকি দিয়ে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর তারা ঘরে থাকা স্বর্ণালংকারসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ সময় পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে গৃহবধূকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-মুখ বেধে একটি ঘরে আটকে রেখে আমাকে দুইজন ধর্ষণ করেছে। পরে স্বর্ণ ও রুপাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ধর্ষণ ও দস্যুতার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।